ঢাকা , বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৪ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

​পাঁচ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ

ডেস্ক রিপোর্ট
আপলোড সময় : ১৬-১২-২০২৪ ০২:২২:৫২ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ১৬-১২-২০২৪ ০২:২২:৫২ অপরাহ্ন
​পাঁচ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ
গ্যাসস্বল্পতা, চুক্তির মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়া ও বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) কাছ থেকে চাহিদা না পাওয়ার কারণে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সামিট পাওয়ার লিমিটেডের পাঁচ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। কেন্দ্রগুলো হচ্ছে আশুলিয়া, মাধবদী, চান্দিনা, জাঙ্গালিয়া ও মদনগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এর মধ্যে চারটি গ্যাসভিত্তিক ও একটি এইচএফও-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। গতকাল স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে কোম্পানিটি।
তথ্যানুসারে, সামিট পাওয়ারের আশুলিয়া, মাধবদী (ইউনিট-১) ও চান্দিনা (ইউনিট-১) বিদ্যুৎ কেন্দ্র তিনটির চুক্তির মেয়াদ গত বছরের ৩১ আগস্ট শেষ হয়েছে। গ্যাসভিত্তিক এ তিন কেন্দ্রের প্রতিটির সক্ষমতা ১১ মেগাওয়াট। ২০২৮ সালের ২১ নভেম্বর পর্যন্ত নো ইলেকট্রিসিটি নো পেমেন্টের ভিত্তিতে কেন্দ্র তিনটির বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির মেয়াদ নবায়ন করা হয়েছে। তবে গ্যাসস্বল্পতার কারণে চুক্তি নবায়নের সময় থেকেই এ কেন্দ্রগুলোর বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
সামিট পাওয়ারের জাঙ্গালিয়া ৩৩ মেগাওয়াট গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ২৪ জুন। বিপিডিবির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কেন্দ্রটির উৎপাদন পুনরায় শুরু কিংবা চুক্তি নবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এর ফলে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকেই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ রয়েছে।
সামিট পাওয়ারের মদনগঞ্জ ১০২ মেগাওয়াট এইচএফও-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ২২ মার্চ। এরপর গত ১ মে থেকে নো ইলেকট্রিসিটি নো পেমেন্ট ভিত্তিতে কেন্দ্রটি চালু রাখা হয়। তবে বিপিডিবির পক্ষ থেকে এ বছরের আগস্টের মাঝামাঝি থেকে কেন্দ্রটি থেকে বিদ্যুৎ নেয়ার জন্য কোনো চাহিদা পাঠানো হয়নি। এর ফলে বর্তমানে কেন্দ্রটিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছে সামিট পাওয়ার।
সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২৩-২৪ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন এখনো প্রকাশ করেনি সামিট পাওয়ার। আলোচ্য হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত আয় (ইপিএস) হয়েছে ২ টাকা ৪০ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ২ টাকা ৫ পয়সা।
গত ৩১ মার্চ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৪০ টাকা ৫০ পয়সায়। সমাপ্ত ২০২৩ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে সামিট পাওয়ার। আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, সমাপ্ত ২০২৩ হিসাব বছরে কোম্পানিটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ২ টাকা ৭ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৩ টাকা ৮৭ পয়সা। সে হিসাবে কোম্পানিটির সমন্বিত ইপিএস কমেছে ৪৬ দশমিক ৫১ শতাংশ। সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি নিট পরিচালন নগদ প্রবাহ (এনওসিএফপিএস) হয়েছে ৭ টাকা ৪ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৫ টাকা ৯১ পয়সা। গত ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির সমন্বিত এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ৩৮ টাকা ২ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৩৫ টাকা ৭২ পয়সা।
২০২১-২২ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশের সুপারিশ করে সামিট পাওয়ারের পর্ষদ। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ৩ টাকা ৮৭ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৫ টাকা ২৫ পয়সা। ওই বছরের ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির সমন্বিত এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ৩৫ টাকা ৭২ পয়সায়, আগের হিসাব বছর শেষে যা ছিল ৩৪ টাকা ৪৫ পয়সা।
৩০ জুন সমাপ্ত ২০২১ হিসাব বছরের জন্য কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ ৩৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। আলোচিত সময়ে ইপিএস হয়েছে ৫ টাকা ২৫ পয়সা এবং ৩০ জুন ২০২১ শেষে সমন্বিত এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ৩৪ টাকা ৪৫ পয়সায়। এ হিসাব বছরে শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে ৮ টাকা ৫৩ পয়সা।
কোম্পানিটির সর্বশেষ ঋণমান দীর্ঘমেয়াদে ‘ট্রিপল এ’, স্বল্পমেয়াদে যা ‘এসটি-১’। কোম্পানিটির ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২৩ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী এবং অন্যান্য গুণগত ও পরিমাণগত তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রত্যয়ন করেছে ক্রেডিট রেটিং ইনফর্মেশন অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (সিআরআইএসএল)।
২০০৫ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সামিট পাওয়ারের অনুমোদিত মূলধন ১ হাজার ৫০০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ৬৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ২ হাজার ১০৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ১০৬ কোটি ৭৮ লাখ ৭৭ হাজার ২৩৯। এর মধ্যে ৬৩ দশমিক ১৮ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালক, ১৮ দশমিক ৫০ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, ৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ বিদেশী বিনিয়োগকারী ও বাকি ১৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সামিট পাওয়ারের শেয়ার সর্বশেষ ১৫ টাকা ৮০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। গত এক বছরের শেয়ারটির দর ১৪ টাকা ৮০ পয়সা থেকে ৩৪ টাকার মধ্যে ওঠানামা করেছে। 

বাংলা স্কুপ/ ডেস্ক/ এনআইএন/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ